মাহমুদুল হাসান ফরিদ -মেহেন্দিগঞ্জ থেকে
বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে ইজারাদারের খামখেয়ালির কারণে মেঘনা নদীতে নৌকা ডুবে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন ৯ জন যাত্রী। সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে ভোলা-মেহেন্দিগঞ্জ সীমান্তের উত্তাল মেঘনায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
উলানিয়া লঞ্চঘাট থেকে ৮ যাত্রী নিয়ে গোবিন্দপুর চরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা হঠাৎ নদীর ঘূর্ণিপাকে পড়ে ডুবে যায়। নৌকাটিতে যাত্রী ছিলেন—রাশিদা, জহুরা, মাকসুদা, বাছেদ রাড়ী, শাহাবুদ্দিন, রহিম, জামাল, সাদ্দাম এবং মাঝি হযরত আলী।
দীর্ঘ সময় ডুবন্ত নৌকার সাথে ভেসে থাকেন তারা। পরে ঢেউয়ের তোড়ে তিন ভাগে ছিটকে পড়লেও ভাগ্যক্রমে স্থানীয় জেলে, ড্রেজারের শ্রমিক ও কোস্টগার্ডের সহযোগিতায় সবাইকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়। বৈরাগীর চর ধানসিঁড়ি থেকে ৫ জন, জনসন এলাকা থেকে ৩ জন এবং কাছিয়া মাঝেরচর থেকে ১ জনকে উদ্ধার করা হয়।
নৌকার মাঝি হযরত আলী জানান, যাত্রীরা দুপুরে গোবিন্দপুর চর থেকে উলানিয়া বাজারে আসেন প্রয়োজনীয় মুদি জিনিসপত্র কেনার জন্য। ফেরার সময় দেখতে পান নৌকার মেশিনের হ্যান্ডেল ও তেলের ক্যান নেই। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, উলানিয়া-গোবিন্দপুর খেয়াঘাটের ইজারাদারের লোকজন ইচ্ছাকৃতভাবে সেগুলো নিয়ে গেছেন। অভিযোগ রয়েছে, ইজারাদারের লোকজন যাত্রীদের চাপ সৃষ্টি করে শুধুমাত্র তাদের ট্রলারে চলাচল করতে বাধ্য করেন। প্রায় দুই ঘণ্টা কাকুতি মিনতির পর রিজার্ভ নৌকাটি ছেড়ে দেয় তারা।
স্থানীয়রা জানান, খেয়া ইজারাদারের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে এ অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে জিম্মি হয়ে আছে। অন্য নৌকা বা ট্রলারে যাতায়াত করলেই যাত্রীদের হয়রানির শিকার হতে হয়। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে কালিগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ এনামুল হক বলেন, “নৌকাটি ছোট আকারের ছিল, তার উপর উত্তাল মেঘনায় যাত্রা করায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে স্থানীয় জেলে, শ্রমিক ও উদ্ধারকর্মীদের সহযোগিতায় সবাইকে জীবিত উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
Leave a Reply